জন্মের সময় নবজাতক কান্না না করায় চিকিৎসকের পরামর্শে রুম হিটারে হিট দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে নবজাতকের দুই পায়ের তালু পুড়ে যায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবস্থা বেগতিক দেখে নবজাতককে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। নবজাতকের অভিভাবকরা শিশুটিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন। জন্মের ১৪ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেনি শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ডা. কেরামত আলী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
নবজাতকের বাবা শুকুর আলী জানান, তাঁর স্ত্রী তাজ নাহারের প্রসবব্যথা হলে গত ১৮ মার্চ রাতে ভর্তি হন স্থানীয় ডা. কেরামত আলী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ওই রাতেই প্রসূতিকে অস্ত্রোপচার করেন ডা. মাহমুদা সুলতানা সাকি। অস্ত্রোপচারের পর নবজাতকটি (ছেলে) কান্না না করায় তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে রুম হিটারে হিট দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুকুর আলী বলেন, ‘আমি পেশায় রাজমিস্ত্রি। এরই মধ্যে ভুল চিকিৎসায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। ছেলেকে সুস্থ করতে আরও টাকা প্রয়োজন। আমার আয় দিয়ে চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব নয়। এ জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। এর জন্য থানা পুলিশ করা হয়নি।’
হাসপাতালটি মালিক আশরাফুল আলম শ্যামলের স্ত্রী মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদা সুলতানা বলেন, ‘ওই শিশুকে রুম হিটার দিয়ে হিট দেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁর হাসপাতাল থেকে ওই নবজাতকের পা পোড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই শিশুটির শারীরিক সমস্যার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছিল।’
ডা. কেরামত আলী মেমোরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক সাঈদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে নবজাতকটির জন্মের পর অ্যানালগ পদ্ধতিতে (রুম হিটার দিয়ে) নবজাতককে হিট দেওয়া হয়। তবে আমরা যখন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করি, তখন শিশুটির পা ভালো ছিল। যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাই স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা চলছে।’
এ ব্যাপারে মীমাংসার মধ্যস্থকারী জয়মন্টব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেনের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ধরেননি।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। সিংগাইরের স্বাস্থ্য বিভাগকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’