• রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেলপথ: চালুর আগেই বেঁকে গেল রেললাইন

নিউজ ডেস্ক ॥
Update : শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩

বন্যার কারণে নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের এক কিলোমিটার অংশে পাথর ও মাটি সরে গিয়ে দেবে গেছে। আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে কিছু অংশ। গতকাল সকাল নয়টায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় ছবি

ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারে রেল যাওয়ার কথা আগামী সেপ্টেম্বরে। কিন্তু গত সপ্তাহের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নির্মাণাধীন রেললাইনের একটি অংশে পাথর ও মাটি ভেসে গেছে। রেললাইন উঁচু-নিচু ও বাঁকা হয়ে গেছে। এতে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় বন্যার পানিতে রেললাইন ডুবে এ অবস্থা হয়েছে। টানা অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ার বিভিন্ন এলাকা গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে ডুবতে শুরু করে। মঙ্গলবার ভোরে রেললাইন পানিতে তলিয়ে যায়। পরদিন বুধবার পানি নামে। এরপর রেললাইন উঁচু-নিচু ও বাঁকা হয়ে যাওয়া এবং লাইন থেকে পাথর ও মাটি সরে যাওয়া দৃশ্যমান হয়। এ পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত রেলপথ নির্মাণকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞ ও এলাকাবাসী। তাঁরা বলছেন, ছোট ছোট যে কালভার্ট রাখা হয়েছে, সেগুলো পানিনিষ্কাশনের জন্য যথেষ্ট নয়।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন করেন। তাঁদের মতে, এক কিলোমিটারজুড়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা যাবে। তাই নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চালু নিয়ে সমস্যা হবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যে অঞ্চলে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখান দিয়ে বান্দরবানের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে এসে সাগরে গিয়ে পড়ে। রেললাইন নির্মাণের সময় তা বিবেচনায় নেওয়া দরকার ছিল। এখন রেললাইন করার কারণে পানিনিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যার ব্যাপকতা বেড়েছে। মানুষকে যেমন ভুগতে হচ্ছে, তেমনি রেলের সম্পদ নষ্ট হয়েছে।

অতিবর্ষণকে দায়ী করলেন রেল কর্মকর্তারা

গতকাল শুক্রবারও রেললাইনের দুই পাশের এলাকা ও বিলে পানি জমে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের এলাকায় এমন ভয়াবহ বন্যা হয়নি। রেললাইনের কারণে পানিনিষ্কাশনের পথ আটকে যাওয়ায় তাঁদের এলাকার বাড়িঘর ডুবে গেছে। যদি রেললাইনে পর্যাপ্ত কালভার্ট বা সেতু নির্মাণ করা হতো, তাহলে এত ক্ষতি হতো না।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন করেন। তাঁদের মতে, এক কিলোমিটারজুড়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা যাবে। তাই নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চালু নিয়ে সমস্যা হবে না। বন্যার পানিতে রেললাইনের এ অবস্থার কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এবং তা সংস্কারে কত অর্থ ব্যয় হবে, তা এখনো পরিমাপ করা হয়নি বলে জানান তাঁরা।

সিএনজিচালক মোহাম্মদ হোসাইন (৪৩) বলেন, তাঁদের এলাকায় রেললাইনে চারটি মাত্র কালভার্ট দেওয়া হয়েছে। শুরুতে আরও কম ছিল। তাঁরা আন্দোলন করলে কালভার্ট বাড়ানো হয়। আরও যদি বাড়ানো হতো, তাহলে এই সর্বনাশ হতো না। ভবিষ্যতেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।


More News Of This Category