কি হবে আজকের ফাইনালে? কুমিল্লা চতুর্থবারের মত চ্যাম্পিয়ন হবে, নাকি সিলেট প্রথমবার শিরোপা জিতবে? পঞ্চমবারের মত বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হাতে উঁচিয়ে গর্বের হাসি হাসবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা? নাকি অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের হাতে তৃতীয়বারের মত উঠবে কাপ?
এসব কৌতুহলি প্রশ্নের পাশাপাশি আরও একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। তাহলো, কে হবেন টুর্নামেন্ট সেরা পারফরমার? সেরা পারফরমারের ১০ লাখ টাকা পুরস্কার জুটবে কার ভাগ্যে? সাকিব আল হাসান নাকি নাসির হোসেন?
কেউ কেউ এই দু’জনের কথাই ভাবছেন। আসর সেরা পারফরমারের সম্ভাব্য তালিকায় সাকিব আল হাসান সব সময় বিপিএলের হট ফেবারিট। আগে ৪ বারের আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার উঠেছে সাকিবের হাতে। এবার তার দল এলিমিনেটর পর্বে বিদায় নিলেও ব্যাট ও বল হাতে ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব ঠিকই নজর কেড়েছেন।
অনেক স্বচ্ছন্দে ও সাবলীল খেলে সর্বাধিক ১৭৪.৪১ স্ট্রাইকরেটে সাকিব ১৩ খেলায় ৩৭৫ রান করে রান তোলায় পাঁচ নম্বরে। সাথে ১৩ খেলায় ১০টি উইকেটও আছে। অলরাউন্ড পারফরমেন্সকে নিয়ামক ধরলে সাকিব এবারও টুর্নামেন্ট সেরার অন্যতম দাবিদার।
সেই তালিকায় অলরাউন্ডার হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে নাসির হোসেনের নামও। ঢাকা ডমিনেটর্স অধিনায়ক নাসির হোসেনও এবার দারুন খেলেছেন। টুর্নামেন্ট সেরা পারফরমারের সম্ভাব্য তালিকায় আছে ঢাকা ডমিনেটরস অধিনায়কের নামও। নাসির হোসেন ১২ ম্যাচে করেছেন ৩৬৬ রান। হাফ সেঞ্চুরি দুটি। সঙ্গে বল হাতেও রেখেছেন কার্যকর ভূমিকা। তার উইকেট ১২ ম্যাচে ১৬টি।
রংপুরের তরুণ ফাস্টবোলার হাসান মাহমুদের (১৪ ম্যাচে ১৭ উইকেট) পর এখনো উইকেট শিকারে নাসির দ্বিতীয়। তবে নাসিরের এমন চৌকস নৈপুণ্য দলের সাফল্যে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ চারে জায়গা পায়নি ঢাকা। তাই ‘ইমপ্যাক্ট’ কম থাকায় নাসিরের এমন জ্বলজ্বলে পারফরমেন্স শেষ পর্যন্ত বিবেচনায় আনা হবে কিনা সন্দেহ।
এর বাইরে আরও তিনটি নামও আছে। যার দুটি সিলেট স্ট্রাইকার্সের। আর একটি রংপুর রাইডার্সের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই তরুন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয়ের নাম।
ফাইনালের আগ পর্যন্ত রান তোলায় সবার ওপরে অবস্থান করছেন এই দুই তরুণ টপ অর্ডার। এর মধ্যে ১৪ খেলায় ৪৫২ রান করে সবার ওপরে অবস্থান করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
আর তৌহিদ হৃদয়ও তার ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছেন। এবারের বিপিএল সেনসেশন এর মোট রান ১২ ম্যাচে ৪০৩। তবে রান তোলায় এক নম্বরে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত আর তৃতীয় তৌহিদ হৃদয়ের মাঝখানে আছেন রংপুরের ওপেনার রনি তালুকদার। এবারের বিপিএলে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলা রনি তালুকদারের মোট রান ১৩ ম্যাচে ৪২৫।
তবে এই তিনজনের মধ্যে দলের সাফল্যে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন তৌহিদ হৃদয়। হাত খুলে শটস খেলার পাশাপাশি এবারের আসরে ৫টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। যার চারটিই ম্যাচ উইনিং ফিফটি (ফরচুন বরিশালের সাথে ৩৪ বলে ৫৫, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৩৭ বলে ৫৬, ঢাকা ডমিনেটরর্সে বিরুদ্ধে ৪৬ বলে ৮৪ আর খুলনা টাইগার্সের সাথে ৪৯ বলে ৭৪) এবং সবকটা ইনিংস তাকে ম্যাচ সেরার পুরস্কারে ভুষিত করেছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এবারের আসরে আর কোনো পারফরমার চারবার ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাননি। কাজেই দল জেতানো ব্যাটিং পারফরমেন্সকে মানদন্ড ধরলে বাকিদের চেয়ে এগিয়ে তৌহিদ হৃদয়।
আজ বৃহস্পতিবারের ফাইনালে ব্যাট হাতে একটি ফিফটি হাঁকাতে পারলে হয়ত আসর সেরা পারফরমার বনে যেতে পারেন তৌহিদ হৃদয়। বাঁ-হাতি নাজমুল হাসান শান্তও আসর সেরা পারফরমারের অন্যতম দাবিদার। তিনিও পুরো আসরে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলেছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি ফিফটি। এছাড়া কুমিল্লার হয়ে ১০ ম্যাচ খেলে যাওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ানও চার হাফ সেঞ্চুরি উপহার দিয়ে দলের উত্তরণে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত এদের কার হাতে ওঠে আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার নগদ ১০ লাখ টাকা?